
একে তো পারফর্ম করেও ভারত জাতীয় দলের স্কোয়াডে জায়গা পাচ্ছেন না মোহাম্মদ শামি, তার ওপর নতুন আপদ হয়ে হাজির সাবেক স্ত্রী হাসিন জাহান। হাইকোর্টের আদেশে সাবেক স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ মাসে ৪ লাখ রুপি করে দেন শামি। কিন্তু সেই অর্থ যথেষ্ট নয় দাবি করে হাসিন ১০ লাখ রুপি দেওয়ার দাবি তুলে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন।
ভারতীয় এই মডেল ও অভিনেত্রীর আবেদনের ভিত্তিতে গতকাল (শুক্রবার) শামি ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে নোটিশ পাঠিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। তাদেরকে চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে। যদিও শুনানি চলাকালে বিচারপতি মনোজ মিশ্র ও উজ্জ্বল ভূঁইয়ার আদালত হাসিনের কাছে জানতে চান, ‘মাসে চার লাখ রুপি কি যথেষ্ট নয়?’ এর আগে তিনি অভিযোগ করে জানান, শামি মাসে মাসে যে টাকা দিচ্ছেন, তা দিয়ে বর্তমান সময়ে মেয়ের শিক্ষা ও নিজের নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মেটানো সম্ভব নয়।
২০১৪ সালে প্রেম করে বিয়ের পর চার বছরের মাথায় ভারতীয় তারকা পেসার শামি ও মডেল হাসিন জাহানের সংসারে ভাঙন ধরে। এরপর থেকেই দীর্ঘ সময় ধরে তাদের বিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই মামলায় স্ত্রী হাসিন ও একমাত্র মেয়ে আয়রাকে ১.৩ লাখ রুপি করে মাসে ভরণপোষণের আদেশ দেন আলিপুর জেলা আদালত। সেটি মানতে না পেরে উচ্চ আদালতে যান হাসিন। কলকাতার উচ্চ আদালত শামিকে মাসে স্ত্রী ও সন্তানের ভরণপোষণ বাবদ ৪ লাখ রুপি করে খরচ বহনের নির্দেশ দেন।
বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫ লাখ ৭২ হাজার টাকারও বেশি। এর মধ্যে স্ত্রীকে দেড় লাখ এবং সন্তানের জন্য আরও আড়াই লাখ রুপি দিতে হচ্ছে। অর্থাৎ, জেলা আদালতের দেওয়া রায়ের চেয়ে আরও বড় অঙ্কের অর্থ গুনতে হচ্ছে শামিকে। গত জুলাইতে দেওয়া হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে এবার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলেন হাসিন। যদিও ৭ বছর আগে ‘প্রোটেকশন অব উইমেন ফ্রম ডোমেস্টিক ভায়োলেন্স অ্যাক্ট-২০০৫’ অনুসারে মামলা দায়েরের পর আইনি খরচ এবং ভরণপোষণ বাবদ ১০ লাখ রুপি চেয়েছিলেন শামির স্ত্রী।
২০১৮ সালে শামির বিরুদ্ধে নির্যাতন, যৌতুকের জন্য হেনস্থার অভিযোগ তুলে মামলা করে হাসিন জাহান। পরবর্তীতে আবার ফিক্সিংয়ের অভিযোগও তোলা হয় ভারতীয় এই তারকার বিরুদ্ধে, যা অবশ্য বিসিসিআই অস্বীকার করেছে। একইসঙ্গে দাম্পত্য ও ব্যক্তিগত ইস্যু লম্বা করতে ফিক্সিংয়ের অভিযোগ তোলা হয় বলেও উল্লেখ করে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড।
চলতি বছরের মার্চে সর্বশেষ জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন শামি। আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে সবমিলিয়ে ১৯৭ ম্যাচে ৪৬২ উইকেট শিকার করা এই তারকা এরপর ইনজুরি ও ফিটনেসজনিত কারণে আর গৌতম গম্ভীরের দলে ডাক পাননি। তবে ফর্ম দেখিয়ে চলেছেন ঘরোয়া ক্রিকেটে। এর আগে দাম্পত্য জীবন নিয়ে কোনো আক্ষেপ আছে কি না এক সাক্ষাৎকারে জানতে চাওয়া হয় শামির কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘বাদ দিন, আমি অতীত নিয়ে কখনও আফসোস করি না। যা হওয়ার হয়েছে। কাউকে দায় দিতে চাই না, এমনকি নিজেকেও। আমি ক্রিকেটে মনোযোগ রাখতে চাই, এ ধরনের বিতর্কে যেতে রাজি নই।’

