হাসিনাসহ রেহানা পরিবারের তিন মামলায় আরও ২২ জনের সাক্ষ্য

প্রকাশ : ০৯ নভেম্বর ২০২৫, ১৯:৩৫ | অনলাইন সংস্করণ

  আমার বার্তা অনলাইন:

ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানাসহ ৫৩ জনের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার করে রাজধানীর পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ৩০ কাঠা সরকারি প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে দুদকের করা তিন মামলায় আরও ২২ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলাগুলোতে আরও অভিযুক্ত রয়েছেন- শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক ও ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।

রোববার (৯ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক রবিউল আলমের আদালতে তারা সাক্ষ্য দেন।

এর মধ্যে শেখ রেহানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন আটজন। তারা হলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাকিরুল ইসলাম খান, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেন, রাজউকের গুলশান জোনের সাবেক উপসচিব তানজিল্লুর রহমান, ঢাকার সদর রেকর্ড রুমের সাব-রেজিস্ট্রার মাহবুবুর রহমান, গাজীপুর কালিয়াকৈর থানার সাবেক সাব-রেজিস্ট্রার সোহেল রানা, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ ও ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন। আদালত এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ১৬ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

আজমিনা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন সাতজন। তারা হলেন- গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাকিরুল ইসলাম খান, রাজউকের গুলশান জোনের সাবেক উপসচিব তানজিল্লুর রহমান, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেন, দুদকের কনস্টেবল আজহারুল ইসলাম, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, গাজী সিপন ইসলাম ও ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসাইন। আদালত এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৩ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

এদিকে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে করা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন সাতজন। তারা হলেন- মনির হোসেন, অগ্রণী ব্যাংক রাজউক ভবন শাখার সহকারী মহাব্যবস্থাপক লায়লা নুর বেগম, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে পরিচালক-২ আল মামুন মিয়া, রাজউকের কম্পিউটার অপারেটর জাকির হোসেন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব জাকিরুল ইসলাম খান, রাজউকের গুলশান জোনের সাবেক উপসচিব তানজিল্লুর রহমান ও ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট হাসিবুজ্জামান। আদালত এ মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৫ নভেম্বর দিন ধার্য করেন।

আদালতের পেশকার বেলাল উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এদিকে শেখ রেহানার বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনিয়মের মাধ্যমে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে গত ১৩ জানুয়ারি মামলা দায়ের করেন দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক ও শেখ হাসিনাসহ ১৫ জনকে আসামি করা হয়। মামলাটির তদন্ত শেষে গত ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা আফনান জান্নাত কেয়া।

এই মামলায় অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, তদন্তে পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া দুই আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

একইভাবে আজমিনা সিদ্দিকও ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নেন। তার বিরুদ্ধেও একই অভিযোগে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া। মামলায় টিউলিপ ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ আরও দুই আসামিসহ মোট ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন আফনান জান্নাত কেয়া।

মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, পরিচালক কামরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরবর্তীতে যুক্ত হওয়া সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

একই অভিযোগে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিকের বিরুদ্ধে ১৩ জানুয়ারি মামলা করেন দুদকের সহকারী পরিচালক এসএম রাশেদুল হাসান। মামলায় টিউলিপ রিজওয়ানা ও শেখ হাসিনাসহ ১৬ জনকে আসামি করা হয়। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ ১৮ জনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এসএম. রাশেদুল হাসান।

রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক, শেখ হাসিনা ও টিউলিপ ছাড়াও মামলার অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, সচিব শহিদ উল্লাহ খন্দকার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, সহকারী পরিচালক ফারিয়া সুলতানা, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, পরিচালক শেখ শহিদুল ইসলাম, তদন্তে প্রাপ্ত আসামি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ।

গত ৩১ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক রবিউল আলম তিন মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন।


আমার বার্তা/এমই